Self-Employment of Underprivileged Individuals

1
৳ 74,100.00 of ৳ 2,000,000.00
ended 2 years ago
Category: Tag:

Description

বার্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন “কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের বৃত্তিমূলক ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি বিষয়ক প্রায়োগিক গবেষণা প্রকল্প’ এর অধীনে কওমী মাদ্রাসায় পড়েছে এমন সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য দুই মাস মেয়াদী রেফ্রিজারেশন এন্ড এয়ারকন্ডিশনিং (ফ্রিজ ও এসি মেরামত/সার্ভিসিং) প্রশিক্ষণ কোর্স শুরু করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। বার্ডের মহাপরিচালক ও সরকারের অতিরিক্ত সচিব জনাব মোঃ শাহজাহান গত ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ উক্ত কোর্সের শুভ উদ্ভোধন করেন। উল্লেখ্য, দেশে কওমী মাদ্রাসার এটাই প্রথম প্রায়োগিক গবেষণা। প্রকল্পটির অধীনে ২০২১ এবং ২০২২ সালে কয়েকটি ব্যাচে কওমী মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের জন্য “বেসিক কম্পিউটার এপ্লিকেশন ও আইসিটি” বিষয়ক প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয় এবং বেশ কিছু মাদ্রাসায় কম্পিউটার সরবরাহ করা হয়। এসব প্রশিক্ষণ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হলে অনেক মাদ্রসা বার্ডের সাথে যোগাযোগ করে এ উদ্যোগটির প্রশংসা করেন এবং এ প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ গ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

উল্লেখ্য, সরকারী হিসাবে দেশে বর্তমানে প্রায় পনেরো হাজারেরও বেশি কওমী মাদ্রাসায় সতেরও লক্ষেরও বেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। বিরাট এ জনগোষ্ঠীর জন্য কারিগরি বা বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের প্রাতিষ্ঠানিক কোনো সুযোগ নাই।

মাদ্রসা সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনাক্রমে এই প্রথম একটি বৃত্তিমূলক ট্রেডে (রেফ্রিজারেশন এন্ড এয়ারকন্ডিশনিং) নির্বাচিত কওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের জন্য প্রশিক্ষণ কোর্স শুরু হল। এ প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীগণ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন National Skill Standard Basic পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। সরকার কর্তৃক স্বীকৃত কারিকুলামে অষ্টম শ্রেণী পাশের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ না থাকায় সাধারণত কওমী মাদ্রাসায় পড়াশোনা করা কেউ এসব প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণ করতে পারে না। আমরা এ প্রায়োগিক গবেষণা প্রকল্পের অধীন কুমিল্লা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) সহযোগিতায় পরীক্ষামূলকভাবে এ প্রশিক্ষণ কোর্সটি শুরু করেছি। গত দুই সপ্তাহ ধরে টিটিসিতে কোর্সটি চলছে। অংশগ্রহণকারীদের আগ্রহ এবং কঠোর পরিশ্রম আমাদেরকে উৎসাহিত করছে। আমাদের বিশ্বাস এ প্রায়োগিক গবেষণার মাধ্যমে একটি মডেল প্রকল্প সৃষ্টি করে আমরা কওমী মাদ্রাসা এবং রাষ্টের মধ্যে একটি কার্যকর সম্পর্ক স্থাপন করতে পারব। আমাদের বিশ্বাস কওমী মাদ্রাসাগুলোর কারিকুলামে (যে বিষয়ে তারা খুব স্পর্শকাতর) এখনই হাত না দিয়ে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এখানে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব।

কওমী মাদ্রাসার পাঠ্যক্রম রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত নয় বলে এখান থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীরা আনুষ্ঠানিক কোনো খাতে কাজ করতে পারছে না। তাছাড়া ধর্মীয় জ্ঞানের বাইরে অন্য কোনো বৃত্তিমূলক কিংবা কারিগরি দক্ষতা না থাকার কারণে তাদের কর্মক্ষেত্র কেবল মসজিদ-মাদ্রাসাতেই সীমাবদ্ধ। বিরাট এই জনগোষ্ঠীর জন্য কারিগরি বা বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ নেই বললেই চলে। অথচ যথাযথ প্রশিক্ষণ পেলে তারাও দক্ষ কর্মী হিসেবে চাকুরী কিংবা সকর্মে নিয়োজিত হতে পারেন। এই ভাবনা থেকেই বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (বার্ড), কুমিল্লা একটি প্রায়োগিক গবেষণার আওতায় কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কারিগরি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার ও আইসিটি, ড্রাইভিং, ফ্রিজ-এসি সার্ভিসিং, ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যালসহ অন্যান্য ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে যাতে করে এই শিক্ষায় শিক্ষিতরা ধর্মীয় জ্ঞানের বাইরে কারিগরি বিষয়েও দক্ষ হতে পারেন।

আমাদের গত কয়েক বছরের কাজের অভিজ্ঞতায় মনে হয়েছে এখানে বিরাট একটি পরিবর্তন আনা সম্ভব। সত্যি কথা বলতে কি, কওমী মাদ্রাসা নিয়ে একাডেমিক এপ্রোচ এ এ দেশে কোনো কাজ হয়নি। বিরাট এই জনগোষ্ঠীকে ধর্মের পাশাপাশি কর্মমুখী করার চেষ্টা করা হয়নি। কাছে গিয়ে মিশে দেখেছি, এই এতিম এবং দুস্থ শিশু-কিশোরগুলোও স্বপ্ন দেখে বড় ইঞ্জিনিয়ার না হলেও টেকনিশিয়ান হতে। কোরান খতম আর দোয়া পড়িয়ে আজীবন মানুষের দয়াদাক্ষিণ্য নিয়ে চলার সংস্কৃতি থেকে তারাও বের হতে চায়। কিন্তু যে বাস্তবতায় তারা থাকেন, সেখান থেকে বের হওয়াটাও কঠিন। আমরা বিশ্বাস করি তাদের পড়াশোনার পাশাপাশি কেবলমাত্র স্বল্প মেয়াদি কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এর মাধ্যমে এর বিরাট একটি অংশকে মানবসম্পদে পরিনত করা সম্ভব। কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অনেক সুশৃঙ্খল এবং কঠোর পরিশ্রমী। ফলে এরা খুব কম সময়েই অনেক কিছু শিখে ফেলতে পারে। এ উদ্যোগটি সফল সফল হলে এ ধরনের প্রকল্প সারা দেশে বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা বিষয়ে সরকারের নিকট প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।

 

প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত প্রতিটি ছাত্রই যাকাত যোগ্য।

আসুন

ওদের স্বাবলম্বীকরণের স্বপ্নকে বাস্তবায়নে শরিক হই।